বাজারে ডলারের চাহিদা মেটাতে গিয়ে এখন টাকার সংকটে দেশ। এই পরিস্থিতিতে টাকার সরবরাহ বাড়ানো ও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণকে বড় চ্যালেঞ্জ মনে করছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার।
নতুন গভর্নর জানান, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে ঋণের সুদহার না কমিয়ে, খরচ কমানোসহ উৎপাদন বাড়ানোর নীতি নেয়া হয়েছে। এছাড়া ব্যাংক খাতে সুশাসন ফেরাতে নেয়া হয়েছে ব্যবস্থা।
বৃহস্পতিবার (৪ আগস্ট) প্রথমবারের মতো আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলন করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। এ সময় গভর্নর বলেন, দেশের অর্থনীতির বড় চ্যালেঞ্জে পরিণত হয়েছে মুল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় গতানুগতিক পথ থেকে বেরিয়ে নেয়া হয়েছে বাস্তব ব্যবস্থা। এছাড়া ডলারের মূল্য নিয়ন্ত্রণে বাজারে ডলার ছেড়ে টাকা উত্তোলনে বাজারে টাকার সরবরাহ কমেছে। যা অর্থনীতিকে ভোগাচ্ছে বলেও জানান গভর্নর।
বাংলাদেশ ব্যাংকে নবনিযুক্ত গভর্নর আরও বলেন, খেলাপি ঋণসহ বিভিন্ন অনিয়মে দেশের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো। তাই এ খাতে সুশাসন ফেরাতে মানদণ্ডে নিচের দিকে থাকা ১০টি ব্যাংকরে রাখা হয়েছে বিশেষ পর্যাবেক্ষণে।
এখনই আমানত ও ঋণের সীমা তুলে নেয়া হচ্ছে না জানিয়ে গভর্নর আব্দুর রউফ আরও বলেন, একটি ব্যাংক খারাপ হলে অন্যটির ওপর এর প্রভাব পড়ে। আমরা কোনো ব্যাংক বন্ধের পক্ষে না, আমানতকারী যেন তার টাকা ফেরত পান সেটা নিশ্চিত করতে চাই। সব ব্যাংক ব্যবসা করবে, লাভ করবে, বাজারে টিকে থাকবে, এটা আমরা চাই।
এছাড়া দীর্ঘ মেয়াদী বিনিয়োগের জন্য দেশের বন্ডের সেকেন্ডারি মার্কেট চালু করার কথাও জানান তিনি। এদিকে আন্তর্জাতিক মুদ্রাবাজারে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রায় সবকটি মুদ্রার বিপরীতে যুক্তরাষ্ট্রের ডলারের দাম কমেছে। ইতোমধ্যে গুঞ্জন ছড়িয়েছে, দেশে ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে ফের সুদের হার বাড়াতে পারে মার্কিন ক্রেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ (ফেড)।
তবে এ নিয়ে পরিষ্কার কোনো তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে ইউরো, স্টার্লিং, ইয়েনের বিপরীতে ডলারের মূল্য হ্রাস পেয়েছে।
সিএনবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বৃহস্পতিবার (৪ আগস্ট) ১৯৯৫ সালের পর সর্বোচ্চ সুদহার বাড়িয়েছে দ্য ব্যাংক অব ইংল্যান্ড (বিওই)। ফলে প্রধান আন্তর্জাতিক মুদ্রার বিপরীতে স্টার্লিংয়ের দর বৃদ্ধি পেয়েছে।
তবে বিওই সুদহার বাড়ানোর ঘোষণার আগে ডলারের বিপরীতে ব্রিটিশ মুদ্রাটির মান দশমিক ২৭ শতাংশ পড়ে যায়। প্রতি স্টার্লিং বিক্রি হয় ১ দশমিক ২১১ ডলারে।
এদিন বিশ্ব মুদ্রাবাজারের প্রধান ছয় মুদ্রার বিপরীতে ডলার সূচক রয়েছে ১০৬ দশমিক ৩৪। সবমিলিয়ে মুদ্রাগুলোর বিপরীতে মার্কিন মুদ্রাটির সূচক নিম্নমুখী হয়েছে শূন্য দশমিক ১৬ শতাংশ।
ইউরোর মূল্যবৃদ্ধি পেয়েছে শূন্য দশমিক ১৫ শতাংশ। ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের (ইইউ) প্রধান মুদ্রাটি বিক্রি হয়েছে ১ দশমিক শূন্য ১৭৮ ডলারে।
এছাড়া জাপানের মুদ্রার বিপরীতে ডলারের মান কমেছে দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ। প্রতি ডলার বিক্রি হয়েছে ১৩৩ দশমিক ৭৭ ইয়েনে।