রিসোর্ট কান্ডের পরই যেনো রাতারাতি প্রকাশ পেতে থাকে হেফাজতে ইসলামের সাবেক যুগ্ম-মহাসচিব মামুনুল হকের নারী ঘটিত একাধিক ঘটনার। কিছুদিন আগে মামুনুল হকের বিরুদ্ধে তার কথিত মানবিক স্ত্রী জান্নাত আরা ঝর্ণার ধর্ষণ মামলা দায়ের করার পর এবার মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন তার আরেক মানবিক স্ত্রী গাজিপুরের কাপাসিয়া নিবাসী জান্নাতুল ফেরদৌস লিপি।
প্রথম মানবিক স্ত্রী’র মতো এই জান্নাতুল ফেরদৌস লিপি’র কথাও জানতো না কেউ। কিন্তু ফোনালাপ প্রকাশের পরই এই মহিলার অস্তিত্বের বিষয়টি জানতে পারেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
উল্লেখ্য যে, চলতি বছরের ৩রা এপ্রিল মামুনুল হক জান্নাত আরা ঝর্ণা নামে এক মহিলাকে নিয়ে নারায়ণগঞ্জের রয়েল রিসোর্টে বেড়াতে গেলে সেখানে তিনি ঐ মহিলা সহ স্থানীয় জনগনের হাতে আটক হন। সেখানে তিনি একপর্যায়ে সাথের মহিলাকে তার নিজের ২য় স্ত্রী বলে দাবী করেন।
উপস্থিত জনগনের চাপের মুখে তিনি ঐ মহিলার নাম আমেনা তৈয়বা বলে দাবী করেন। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে জানা যায় আমেনা তৈয়বা তার আসল স্ত্রী যিনি মোহাম্মদপুরে থাকেন।
পরে সংবাদ মাধ্যমের মাধ্যমে জানা যায় যে, নিজের রিফ্রেশমেন্টের জন্য রিসোর্টে যে নারীকে নিয়ে তিনি যান সে নারীর নাম রিসোর্ট রেজিষ্টারে আমেনা তৈয়বা নাম উল্লেখ করেন যার প্রকৃত নাম জান্নাত আরা ঝর্ণা বলে নিজের মুখেই স্বীকার করেন তার সাথে থাকা সে নারী নিজেই। পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টি ভাইরাল হলে বিষয়টি ধামাচাপা দেবার জন্য নিজ স্ত্রীকে ফোনে জানান যে, তার সাথে থাকা নারী তার বন্ধু শহিদুলের স্ত্রী এবং তাৎক্ষণিক অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে ঐ নারীকে নিজের স্ত্রী বলে পরিচয় দিতে বাধ্য হন। আর এভাবেই মামুনুল হক তার নিজের প্রকৃত স্ত্রী আমেনা তৈয়বাকে ফোনে ম্যানেজ করার চেষ্টা করেন।
ঘটনার প্রেক্ষাপটে জানা যায়, জান্নাত আরা ঝর্ণা তার আসল স্ত্রী নন বরং ঐ মহিলার ডিভোর্স হয়ে যাবার পর মামুনুল হক ঝর্ণাকে সহযোগীতার নামে দিনের পর অনৈতিভোবে ভোগ করেছেন।
এ অবস্থায়, জান্নাত আরা ঝর্ণা গত ৩০শে এপ্রিল (শুক্রবার) মামুনুল হকের নামে প্রতারনা, মিথ্যা আশ্বাস ও ধর্ষণের অভিযোগ এনে মামলা করেন, যা এখন আইন শৃঙ্খলা বাহিনী তদন্ত করে দেখছেন।
কিন্তু এঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই গাজিপুরের কাপাসিয়া নিবাসী জান্নাতুল ফেরদৌস লিপি নামের এক নারীও মামুনুল হকের বিরুদ্ধে মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানা গেছে। মূলতঃ জান্নাত আরা ঝর্ণার ঘটনার পরই জান্নাতুল ফেরদৌস লিপি নামটি জনসম্সুখে আসে। লিপি দাবী করেন যে, তাকেও বিয়ে করার সময় কোন কাবিন নাম করা হয় নায়, মুখে মুখে তাকে কলেমা পড়ে বিয়ে করে দিনের পর দিন ভোগ করেছেন মামুনুল হক।
এরপর কমিউনিস্ট পার্টির জেনারেল সেক্রেটারী ডা. এম এ সামাদ কিছুদিন আগে ফেসবুক লাইভে এসে আরেক চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়ে বোমা ফাটালেন। সেদিন তিনি জানান মামুনুল হক তার পিতা স্বঘোষিত স্বাধীনতাবিরোধী আজিজুল হকের বিবাহিত স্ত্রী ফারহানাকে ডিভোর্স দিলে মামুনুল হক সে নারীকে ধর্মের দোহাই দিয়ে বিয়ে করেন।
ডা. সামাদ জানান, ফরহানা বর্তমানে যুক্তরাষ্ট প্রবাসী এবং ফেসবুক প্রোফাইলে মামুনুল হকের স্ত্রী পরিচয় আজও বহন করেন।
এ যখন পরিস্থিতি, তখন আচমকা ফেসবুক লাইভে এসে এক মহিলা মামুনুল হকের পক্ষ নিয়ে মামুনুল বিরোধীদের কাছে প্রশ্ন রাখেন, মামুনুল হক একাধিক বিয়ে করলে কার কী সমস্যা?
এমন অবস্থায় মামুনুল হকের একের পর এক মানবিক বিয়ের নামে নারীদের সাথে অনৈতিক সম্পর্কের কথা যখন প্রকাশ্যে আসছে তখন অনেকেই বলছেন, এমন আরও হয়তো অনেক কাবিন ছাড়া বিয়ের কাহিনী হয়তো রয়ে গেছে যা প্রকাশের অপেক্ষায় আছে।