০৯:১১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চা বাগান মালিকদের সঙ্গে আজ প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৪:৩২:০৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ অগাস্ট ২০২২
  • 19

বন্যার সময় সহজ যোগাযোগের জন্য পদ্মা সেতু আশীর্বাদ হবে : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ চা বাগান মালিকদের সঙ্গে সভা করবেন। গতকাল প্রধানমন্ত্রীর সহকারী প্রেস সচিব এম এম ইমরুল কায়েস জানান, আজ বিকাল চারটায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।

গত ৯ আগস্ট থেকে ৩০০ টাকা মজুরির দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন চা-শ্রমিকরা। গত কয়েক দিন ধরে চা-শ্রমিকদের সঙ্গে শ্রমিক নেতারা কথা বলে, আশ্বাস দিয়েও কোনো কাজ হয়নি। এ ছাড়া, প্রশাসনের কর্মকর্তারাও নানা আশ্বাস দিলেও কাজে ফেরেনি তারা। চা-শ্রমিকদের আন্দোলনের মাঝে চা বাগান মালিকেরা ২৫ টাকা মজুরি বাড়িয়ে ১৪৫ টাকার প্রস্তাব করলেও তারা কাজে ফেরেনি। ৩০০ টাকা দৈনিক মজুরির দাবি করেন তারা।
ওই চা-শ্রমিকরা ধর্মঘট পালনের পাশাপাশি বুধবার মৌলভীবাজারে ঢাকা-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়ক অবরোধ করেছেন। শ্রীমঙ্গলে সাতগাঁও চা-বাগানের চা কারখানার সামনের মহাসড়কে তারা অবস্থান নেন। জেলার বড়লেখায় শ্রমিকরা দুপুরে দুটি স্থানে আঞ্চলিক মহাসড়ক দুই ঘণ্টা অবরোধ করে রাখেন। সিলেট ও হবিগঞ্জে দাবি আদায়ে চা শ্রমিকরা কর্মবিরতির পাশাপাশি বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছেন।

এদিকে ওয়ার্কার্স পার্টির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে গতকাল বলা হয়, চা বাগান মালিকেরা বাসস্থান, আলো, পানি, চিকিৎসাসুবিধা,অবসর ভাতা বা ভবিষ্য তহবিল, বাসাবাড়িতে উৎপাদিত ফলমূল, গৃহায়নের সুবিধাকে দৈনিক মজুরির সঙ্গে যুক্ত করে যে যুক্তি দেখাচ্ছেন তা শ্রম আইনের সুস্পষ্ট লংঘন। আরো বলা হয়, বর্তমানে চা শ্রমিকদের যে মজুরি, বিদ্যমান উচ্চমূল্যের বাজারে কখনই তা জীবন-যাপনের উপযোগী মজুরি হতে পারে না।
শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, সাতগাঁও চা বাগানের শ্রমিক সুধাং বাউরি জানান, দীর্ঘ দিন ধরে মজুরি পাচ্ছি না। ঘরে খাবার নেই কাঁচা চা পাতা এখন ভরসা। এনজিও থেকে ঋণ নিয়েছি। ঋণের বোঝা বাড়ছে।চা শ্রমিক সিত কুমার জানান, আমরা এখন প্রধানমন্ত্রীর দিকে তাকিয়ে আছি। আমরা ন্যায্য মজুরি নিয়ে কাজে নামতে চাই।
বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি বিপ্লব মাদ্রাজি পাশী জানান, চা-শ্রমিক তাদের যৌক্তিক দাবিতে একযোগে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। সংগ্রামী চা-শ্রমিকরা তাদের দাবি আদায়ে বদ্ধপরিকর। শ্রমিকরা কর্মবিরতি চালিয়ে যাচ্ছেন, ফলে তাদের মজুরি এবং রেশন বন্ধ হয়ে আছে। এই রকম পরিস্থিতিতে ঋণ প্রদানকারী সংস্থাকে মানবিক বিবেচনায় কিস্তি উত্তোলন করা থেকে বিরত থাকা এবং কোনো প্রকার চাপ সৃষ্টি না করার আহ্বান জানাচ্ছি।

প্রধানমন্ত্রী চা বাগান মালিকদের সাথে বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাইলে কমলগঞ্জ উপজেলার মহসিন টি হোল্ডিং লিমিটেড’র শ্রীগোবিন্দপুর চা বাগানের সত্ত্বাধিকারী শ্রীমঙ্গল পৌরসভার মেয়র মো. মহসিন মিয়া মধু  জানান, আমাদের প্রধানমন্ত্রী শ্রমিক-মালিক উভয়পক্ষের আশ্রয়কেন্দ্র। প্রধানমন্ত্রী চা শ্রমিকদের মজুরি নিয়ে যে ঘোষণাই দিবেন চা বাগান মালিকরা সেটাই মেনে নিবেন।

বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক বিজয় হাজরা জানান, আমরা সবাই প্রধানমন্ত্রীর মুখের দিকে তাকিয়ে রয়েছি। প্রধানমন্ত্রী যে সিদ্ধান্ত নেবেন, সাধারণ চা শ্রমিকরা সেটাই মেনে নেবেন।
প্রসঙ্গত, দেশের ১৬৭টি চা-বাগানে শ্রমিকের সংখ্যা দেড় লাখেরও বেশি।

Tag :
About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

একুশে ফেব্রুয়ারির প্রথম প্রহরে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা

চা বাগান মালিকদের সঙ্গে আজ প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক

Update Time : ০৪:৩২:০৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ অগাস্ট ২০২২

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ চা বাগান মালিকদের সঙ্গে সভা করবেন। গতকাল প্রধানমন্ত্রীর সহকারী প্রেস সচিব এম এম ইমরুল কায়েস জানান, আজ বিকাল চারটায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।

গত ৯ আগস্ট থেকে ৩০০ টাকা মজুরির দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন চা-শ্রমিকরা। গত কয়েক দিন ধরে চা-শ্রমিকদের সঙ্গে শ্রমিক নেতারা কথা বলে, আশ্বাস দিয়েও কোনো কাজ হয়নি। এ ছাড়া, প্রশাসনের কর্মকর্তারাও নানা আশ্বাস দিলেও কাজে ফেরেনি তারা। চা-শ্রমিকদের আন্দোলনের মাঝে চা বাগান মালিকেরা ২৫ টাকা মজুরি বাড়িয়ে ১৪৫ টাকার প্রস্তাব করলেও তারা কাজে ফেরেনি। ৩০০ টাকা দৈনিক মজুরির দাবি করেন তারা।
ওই চা-শ্রমিকরা ধর্মঘট পালনের পাশাপাশি বুধবার মৌলভীবাজারে ঢাকা-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়ক অবরোধ করেছেন। শ্রীমঙ্গলে সাতগাঁও চা-বাগানের চা কারখানার সামনের মহাসড়কে তারা অবস্থান নেন। জেলার বড়লেখায় শ্রমিকরা দুপুরে দুটি স্থানে আঞ্চলিক মহাসড়ক দুই ঘণ্টা অবরোধ করে রাখেন। সিলেট ও হবিগঞ্জে দাবি আদায়ে চা শ্রমিকরা কর্মবিরতির পাশাপাশি বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছেন।

এদিকে ওয়ার্কার্স পার্টির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে গতকাল বলা হয়, চা বাগান মালিকেরা বাসস্থান, আলো, পানি, চিকিৎসাসুবিধা,অবসর ভাতা বা ভবিষ্য তহবিল, বাসাবাড়িতে উৎপাদিত ফলমূল, গৃহায়নের সুবিধাকে দৈনিক মজুরির সঙ্গে যুক্ত করে যে যুক্তি দেখাচ্ছেন তা শ্রম আইনের সুস্পষ্ট লংঘন। আরো বলা হয়, বর্তমানে চা শ্রমিকদের যে মজুরি, বিদ্যমান উচ্চমূল্যের বাজারে কখনই তা জীবন-যাপনের উপযোগী মজুরি হতে পারে না।
শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, সাতগাঁও চা বাগানের শ্রমিক সুধাং বাউরি জানান, দীর্ঘ দিন ধরে মজুরি পাচ্ছি না। ঘরে খাবার নেই কাঁচা চা পাতা এখন ভরসা। এনজিও থেকে ঋণ নিয়েছি। ঋণের বোঝা বাড়ছে।চা শ্রমিক সিত কুমার জানান, আমরা এখন প্রধানমন্ত্রীর দিকে তাকিয়ে আছি। আমরা ন্যায্য মজুরি নিয়ে কাজে নামতে চাই।
বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি বিপ্লব মাদ্রাজি পাশী জানান, চা-শ্রমিক তাদের যৌক্তিক দাবিতে একযোগে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। সংগ্রামী চা-শ্রমিকরা তাদের দাবি আদায়ে বদ্ধপরিকর। শ্রমিকরা কর্মবিরতি চালিয়ে যাচ্ছেন, ফলে তাদের মজুরি এবং রেশন বন্ধ হয়ে আছে। এই রকম পরিস্থিতিতে ঋণ প্রদানকারী সংস্থাকে মানবিক বিবেচনায় কিস্তি উত্তোলন করা থেকে বিরত থাকা এবং কোনো প্রকার চাপ সৃষ্টি না করার আহ্বান জানাচ্ছি।

প্রধানমন্ত্রী চা বাগান মালিকদের সাথে বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাইলে কমলগঞ্জ উপজেলার মহসিন টি হোল্ডিং লিমিটেড’র শ্রীগোবিন্দপুর চা বাগানের সত্ত্বাধিকারী শ্রীমঙ্গল পৌরসভার মেয়র মো. মহসিন মিয়া মধু  জানান, আমাদের প্রধানমন্ত্রী শ্রমিক-মালিক উভয়পক্ষের আশ্রয়কেন্দ্র। প্রধানমন্ত্রী চা শ্রমিকদের মজুরি নিয়ে যে ঘোষণাই দিবেন চা বাগান মালিকরা সেটাই মেনে নিবেন।

বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক বিজয় হাজরা জানান, আমরা সবাই প্রধানমন্ত্রীর মুখের দিকে তাকিয়ে রয়েছি। প্রধানমন্ত্রী যে সিদ্ধান্ত নেবেন, সাধারণ চা শ্রমিকরা সেটাই মেনে নেবেন।
প্রসঙ্গত, দেশের ১৬৭টি চা-বাগানে শ্রমিকের সংখ্যা দেড় লাখেরও বেশি।