০৫:৫৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

চালককে হত্যা করে রিকশা-সিএনজি ছিনতাই করাই পেশা

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৩:০১:৫৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৩ নভেম্বর ২০২২
  • 15

প্রথমে যাত্রী সেজে রিকশা-সিএনজিতে উঠতো। এরপর সুযোগ বুঝে নিরিবিলি পরিবেশে চালককে মারধর করে বাহনটি ছিনতাই করে পালিয়ে যেতো। কখনও কখনও চালককে হত্যাও করতো তারা। এমনি একটি চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ। তারা হলেন মানিক সরদার, দেলোয়ার ও ইলিয়াস কাঞ্চন।
শনিবার (১২ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর মিন্টু রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস্) এ কে এম হাফিজ আক্তার।

তিনি বলেন, গত ২ নভেম্বর রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানার শ্যামলী পিসি কালচার এলাকা থেকে অচেতন অবস্থায় মোক্তার হোসেন (৬০) নামে এক সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালককে উদ্ধার করেন পথচারীরা। পরে তাকে শেরেবাংলা নগরের শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় নিহতের ছেলে মো. হাবিব হোসেন মোহাম্মদপুর থানায় একটি মামলা করেন। এরপর মামলা তদন্তে গিয়ে শুক্রবার দিনগত রাতে চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেফতার করে মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ। এ সময় তাদের কাছ থেকে নিহতের মোবাইল ফোন, ছিনিয়ে নেওয়া অটোরিকশাসহ ১৮টি অটোরিকশা উদ্ধার করা হয়।

তিনি বলেন, ঘটনাস্থল ও এর আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ ও তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ঘটনায় জড়িত মানিক সরদারকে শনাক্ত করা হয়। এরপর শুক্রবার রাতে মোহাম্মদপুরে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। তার দেওয়া তথ্যের ভিক্তিতে অভিযান চালিয়ে চক্রের সদস্য দেলোয়ার ও ইলিয়াস কাঞ্চনকে গাজীপুর থেকে গ্রেফতার করা হয়। বাকি আসামিদের ধরতে অভিযান অব্যাহত আছে। পরে তাদের কাছ থেকে ছয়পাতা চেতনানাশক ওষুধ জব্দ করা হয়।

গ্রেফতারদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্যের বরাত দিয়ে হাফিজ আক্তার বলেন, একজন সর্দারের নেতৃত্বে চক্রের সদস্যরা ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও সিএনজি চুরি করে আসছে। তিন-চারজন করে দলে ভাগ হয়ে ১০-১২টি দল বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে ব্যাটারি বা সিএনজিচালিত অটোচালকদের টার্গেট করেন। এরপর ভাড়া নিয়ে বিভিন্ন এলাকায ঘুরে বেড়ানোর এক পর্যায়ে চালকের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তুলে নির্জন কোনো স্থানে নিয়ে যায়। আলাপচারিতার একপর্যায়ে চালককে জুস ও কোমল পানীয়ের সঙ্গে চেতনানাশক খাইয়ে অচেতন করে অটোরিকশা নিয়ে পালিয়ে যায়।

তারা বিভিন্ন এলাকা থেকে রিকশা চুরি করে সেই রিকশা কামরাঙ্গীরচর এলাকায় বিক্রি করতেন। প্রতিটি ব্যাটারিচালিত রিকশা ১৫-২০ হাজার টাকায় বিক্রি করেন। তারা দুই শতাধিক ব্যাটারিচালিত রিকশা চুরি করেছেন বলে স্বীকার করেন।

Tag :
About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

একুশে ফেব্রুয়ারির প্রথম প্রহরে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা

চালককে হত্যা করে রিকশা-সিএনজি ছিনতাই করাই পেশা

Update Time : ০৩:০১:৫৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৩ নভেম্বর ২০২২

প্রথমে যাত্রী সেজে রিকশা-সিএনজিতে উঠতো। এরপর সুযোগ বুঝে নিরিবিলি পরিবেশে চালককে মারধর করে বাহনটি ছিনতাই করে পালিয়ে যেতো। কখনও কখনও চালককে হত্যাও করতো তারা। এমনি একটি চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ। তারা হলেন মানিক সরদার, দেলোয়ার ও ইলিয়াস কাঞ্চন।
শনিবার (১২ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর মিন্টু রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস্) এ কে এম হাফিজ আক্তার।

তিনি বলেন, গত ২ নভেম্বর রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানার শ্যামলী পিসি কালচার এলাকা থেকে অচেতন অবস্থায় মোক্তার হোসেন (৬০) নামে এক সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালককে উদ্ধার করেন পথচারীরা। পরে তাকে শেরেবাংলা নগরের শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় নিহতের ছেলে মো. হাবিব হোসেন মোহাম্মদপুর থানায় একটি মামলা করেন। এরপর মামলা তদন্তে গিয়ে শুক্রবার দিনগত রাতে চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেফতার করে মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ। এ সময় তাদের কাছ থেকে নিহতের মোবাইল ফোন, ছিনিয়ে নেওয়া অটোরিকশাসহ ১৮টি অটোরিকশা উদ্ধার করা হয়।

তিনি বলেন, ঘটনাস্থল ও এর আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ ও তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ঘটনায় জড়িত মানিক সরদারকে শনাক্ত করা হয়। এরপর শুক্রবার রাতে মোহাম্মদপুরে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। তার দেওয়া তথ্যের ভিক্তিতে অভিযান চালিয়ে চক্রের সদস্য দেলোয়ার ও ইলিয়াস কাঞ্চনকে গাজীপুর থেকে গ্রেফতার করা হয়। বাকি আসামিদের ধরতে অভিযান অব্যাহত আছে। পরে তাদের কাছ থেকে ছয়পাতা চেতনানাশক ওষুধ জব্দ করা হয়।

গ্রেফতারদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্যের বরাত দিয়ে হাফিজ আক্তার বলেন, একজন সর্দারের নেতৃত্বে চক্রের সদস্যরা ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও সিএনজি চুরি করে আসছে। তিন-চারজন করে দলে ভাগ হয়ে ১০-১২টি দল বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে ব্যাটারি বা সিএনজিচালিত অটোচালকদের টার্গেট করেন। এরপর ভাড়া নিয়ে বিভিন্ন এলাকায ঘুরে বেড়ানোর এক পর্যায়ে চালকের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তুলে নির্জন কোনো স্থানে নিয়ে যায়। আলাপচারিতার একপর্যায়ে চালককে জুস ও কোমল পানীয়ের সঙ্গে চেতনানাশক খাইয়ে অচেতন করে অটোরিকশা নিয়ে পালিয়ে যায়।

তারা বিভিন্ন এলাকা থেকে রিকশা চুরি করে সেই রিকশা কামরাঙ্গীরচর এলাকায় বিক্রি করতেন। প্রতিটি ব্যাটারিচালিত রিকশা ১৫-২০ হাজার টাকায় বিক্রি করেন। তারা দুই শতাধিক ব্যাটারিচালিত রিকশা চুরি করেছেন বলে স্বীকার করেন।