কক্সবাজারের ১৯ দফা দাবিতে ‘বাড়ি চলো’ সমাবেশ করার প্রস্তুতি নিয়েছে রোহিঙ্গারা। রোববার (১৯ জুন) কয়েকটি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে একযোগে হতে পারে এ সমাবেশ। যদিও বিষয়টি নিয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হননি কক্সবাজারস্থ শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের কার্যালয়।৮ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কামরান হোসেন রোহিঙ্গাদের এরকম একটি সমাবেশের প্রস্তুতির কথা স্বীকার করেছেন। তিনি বলেছেন, কোথায় কোনো ক্যাম্পে এ সমাবেশ হবে তা পরে জানানো হবে।ইতোমধ্যে সমাবেশের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ১৯ দফা ও ১৩ দফা দাবি সম্বলিত পৃথক দুইটি প্রচারপত্র সময় সংবাদের প্রতিবেদকের হাতে এসে পৌঁছেছে। প্রচারপত্র দুইটি আরকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস্ (এআরএইচপিএইচ) লোগো রয়েছে। যার মধ্যে ১৯ দাবি সম্বলিত প্রচারপত্রটিতে কারও স্বাক্ষর না থাকলেও ১৩ দফা দাবি সম্বলিত প্রচারপত্রে দুই সদস্যের স্বাক্ষর রয়েছে। এ দুই সদস্য হলেন ডা. তৈয়ব ও এমডি মো. রেজা।
প্রচারপত্রের দাবিসমূহ হলো, অন্য জাতিদের মতোই আমাদের মূল অধিকার পুনরুদ্ধার করতে হবে। রোহিঙ্গাদের রোহিঙ্গা হিসেবেই সম্বোধন করতে হবে। প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া সীমাবদ্ধ হতে হবে। মিয়ানমার ট্রানজিট ক্যাম্পে অবস্থানের সময়সীমা কমাতে হবে। প্রত্যেক রোহিঙ্গাকে প্রত্যাবাসন করতে হবে। রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে গ্রামে গ্রামে প্রত্যাবাসন করতে হবে। প্রত্যাবাসন সম্পর্কে প্রতিটি সমঝোতা অবশ্যই জড়িত থাকতে হবে। প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় ইউএস, এলআইএন, ওআইসি, ইউকে, ইইউ, আসিয়ান, বাংলাদেশ, এনজিও ইত্যাদি দেশ ও এনজিওদের অবশ্যই জড়িত থাকতে হবে। রোহিঙ্গারা ঘরে ফেরার পূর্বে তাদের সুরক্ষা দিতে আরটুপি অবশ্যই আরাকানে থাকতে হবে। রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে নিজ দেশে পুনর্বাসিত করতে হবে। রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে সন্ত্রাসী হিসেবে অভিযুক্ত করা যাবে না। কোনোভাবে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া বন্ধ করা যাবে না। আন্তর্জাতিক মিডিয়া আরকানের প্রত্যেক এলাকাতে পরিদর্শনের অনুমোদন থাকতে হবে।
১৯৮২ সালের নাগরিক আইন বাতিল করতে হবে। প্রত্যাবাসনের আগে কারণবশত আরাকানে আইডিপি ক্যাম্প যতটুকু সম্ভব বাতিল করতে হবে। রোহিঙ্গাদের জন্য দায়িত্ব থাকতে হবে। রোহিঙ্গাদের সম্পদ ফিরিয়ে দিতে হবে। জমি থেকে বায়েজাপ্তকৃত চিংড়ি পুকুর, চারণভূমি রোহিঙ্গাদের ফেরত দিতে হবে। আমরা বাংলাদেশের রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির থেকে রোহিঙ্গা গণহত্যায় বেঁচে যাওয়া রোহিঙ্গা শরণার্থী। ২০১৯ সালের ২৫ আগস্ট এ সংগঠনটির ব্যানারে বড় একটি সমাবেশ হয়েছিল। যার নেতৃত্ব দিয়েছিলেন সংগঠনের চেয়ারম্যান, গত ২০২১ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত মুহিবুল্লাহ।
ইতোমধ্যে মুহিবুল্লাহ হত্যা মামলার অভিযোগপত্রে হত্যাকাণ্ডের জন্য মিয়ানমারের সশস্ত্র বিদ্রোহী সংগঠন আরসাকে দায়ী করা হয়েছে। মুহিবুল্লাহ রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের পক্ষে জনমত গঠন করায় তাকে হত্যা করা হয় বলেও উল্লেখ করা হয় অভিযোগপত্রে।