০৯:৫৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কওমি মাদরাসার শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের সব ধরনের রাজনীতি নিষিদ্ধ।

  • Reporter Name
  • Update Time : ০১:৪৪:৩১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ জুন ২০২১
  • 45

রোববার কওমি মাদরাসার সর্বোচ্চ পর্যায়ের নীতি নির্ধারণী বোর্ড আল-হাইআতুল উলয়া লিল জামিআতিল কওমিয়া ও কওমি মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড বেফাকুল মাদ্ররাসিন আরাবিয়া এ সিদ্ধান্ত জানায়। পরে এ বিষয়ে পৃথক বিবৃতিও পাঠানো হয়েছে সংবাদমাধ্যমে।

গত মাসে মোদি সফরের আন্দোলনে তাণ্ডব চালানোর জেরে কওমি মাদরাসাভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলামের নেতাদের ধরপাকড়ের মধ্যে এ সিদ্ধান্ত আসলো।

বিবৃতির আগে রাজধানীর যাত্রাবাড়ির জামিয়া ইসলামিয়া দারুল উলুম মাদানিয়া মাদরাসায় কওমি বেফাকের চেয়ারম্যান আল্লামা মাহমুদুল হাসানের সভাপতিত্বে বৈঠক হয়। এতে সম্প্রতি গ্রেপ্তার হওয়া ওলামা, ইমাম, শিক্ষার্থীদের মুক্তি দাবিও জানানো হয়েছে।

কওমি মাদরাসা কেন্দ্রিক যাবতীয় সিদ্ধান্ত একমাত্র হাইয়াতুল উলয়া নেবে বলেও বেফাকের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেই সঙ্গে বেফাকের অধীনে থাকা ছয়টি সিদ্ধান্তের বাহিরে কেউ আলাদা সিদ্বান্ত নিতে পারবে না।

‘বৈঠকে নেয়া এসব সিদ্ধান্ত সরকারের কাছেও পৌঁছাতে চায় বেফাক। সেজন্য তিন সদস্যের একটি কমিটিও গঠন করা হবে। যারা বেফাকের নেয়া এসব সিদ্ধান্ত নিয়ে সরকারের প্রতিনিধির সঙ্গে আলোচনা করবেন।’

বৈঠকে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মাহমুদুল হাসান, নুরুল ইসলাম, মাহফুজুল হক, আব্দুল কুদ্দুস, আব্দুল হামীদ (পীর সাহেব মধুপুর) সহ অনেকে।

আল-হাইআতুল উলয়ার অফিস সম্পাদক অছিউর রহমান স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সভায় বর্তমান পরিস্থিতিতে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হল-

০১. কওমি মাদরাসা সম্পর্কিত যাবতীয় বিষয়ে সিদ্ধান্ত ও পদক্ষেপ গ্রহণ করবে একমাত্র আল-হাইআতুল উলয়া। আল-হাইআতুল উলয়ার অধীন এক বা একাধিক বোর্ড কিংবা কোন সংগঠন বা ব্যক্তি আল-হাইআতুল উলয়ার সিদ্ধান্ত ছাড়া পৃথকভাবে কওমি মাদরাসা বিষয়ক কোনো সিদ্ধান্ত বা পদক্ষেপ বা উদ্যোগ গ্রহণ করতে পারবে না।

০২. কওমি মাদরাসার ছাত্র ও শিক্ষকরা প্রচলিত সর্বপ্রকার রাজনীতি থেকে মুক্ত থাকবে মর্মে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

০৩. আল-হাইআতুল উলয়ার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য এবং কওমি মাদরাসা সম্পর্কিত যাবতীয় বিষয়ে সিদ্ধান্তগ্রহণ ও তত্ত্বাবধানের জন্য আল-হাইআতুল উলয়ার অধীন।

০৪. বোর্ডের পাঁচজন, বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া থেকে পাঁচজন এবং চেয়ারম্যান মনোনীত পাঁচজন সমন্বয়ে সর্বমোট ১৫ জনের একটি ‘বাস্তবায়ন সাব-কমিটি’ গঠিত হবে।

০৫. উদ্ভূত পরিস্থিতিতে কওমি মাদরাসার যেসব নিরীহ ছাত্র, শিক্ষক, আলেম-ওলামা, ধর্মপ্রাণ মুসলমান এবং মসজিদের ইমাম ও মুসল্লিদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, রমযানের এ রহমতের মাস বিবেচনায় সরকারের কাছে তাদের মুক্তির আহ্বান জানানো হয়।

০৬. নিরীহ আলেম-ওলামা, মাদরাসার ছাত্র ও ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের হয়রানী না করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা হয়।

এ ছাড়া বিবৃতিতে বলা হয়, পবিত্র রমযান কোরআন তেলাওয়াতের মাস। কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে বালা-মুসিবত ও মহামারি দূর হয়। তাই রমযানের মধ্যেই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক ঘোষিত স্বাস্থ্যবিধি মেনে হিফজ ও মক্তব বিভাগ খুলে দেয়ার জন্য এবং রমযানের পর কওমি মাদরাসার শিক্ষাকার্যক্রম চালু করার জন্য সরকারের কাছে বিশেষভাবে আবেদন করা হয়েছে।

আল-হাইআতুল উলয়ার সভার সিদ্ধান্ত সম্পর্কে সরকারকে অবহিত করার জন্য ৩ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল গঠন করা হয়েছে। এই প্রতিনিধি দল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। কমিটির সদস্যরা হলেন: মাওলানা মুফতি রুহুল আমীন, মাওলানা মুফতি মোহাম্মদ আলী ও মাওলানা মুফতি জসীমুদ্দীন।

Tag :
About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

একুশে ফেব্রুয়ারির প্রথম প্রহরে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা

কওমি মাদরাসার শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের সব ধরনের রাজনীতি নিষিদ্ধ।

Update Time : ০১:৪৪:৩১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ জুন ২০২১

রোববার কওমি মাদরাসার সর্বোচ্চ পর্যায়ের নীতি নির্ধারণী বোর্ড আল-হাইআতুল উলয়া লিল জামিআতিল কওমিয়া ও কওমি মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড বেফাকুল মাদ্ররাসিন আরাবিয়া এ সিদ্ধান্ত জানায়। পরে এ বিষয়ে পৃথক বিবৃতিও পাঠানো হয়েছে সংবাদমাধ্যমে।

গত মাসে মোদি সফরের আন্দোলনে তাণ্ডব চালানোর জেরে কওমি মাদরাসাভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলামের নেতাদের ধরপাকড়ের মধ্যে এ সিদ্ধান্ত আসলো।

বিবৃতির আগে রাজধানীর যাত্রাবাড়ির জামিয়া ইসলামিয়া দারুল উলুম মাদানিয়া মাদরাসায় কওমি বেফাকের চেয়ারম্যান আল্লামা মাহমুদুল হাসানের সভাপতিত্বে বৈঠক হয়। এতে সম্প্রতি গ্রেপ্তার হওয়া ওলামা, ইমাম, শিক্ষার্থীদের মুক্তি দাবিও জানানো হয়েছে।

কওমি মাদরাসা কেন্দ্রিক যাবতীয় সিদ্ধান্ত একমাত্র হাইয়াতুল উলয়া নেবে বলেও বেফাকের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেই সঙ্গে বেফাকের অধীনে থাকা ছয়টি সিদ্ধান্তের বাহিরে কেউ আলাদা সিদ্বান্ত নিতে পারবে না।

‘বৈঠকে নেয়া এসব সিদ্ধান্ত সরকারের কাছেও পৌঁছাতে চায় বেফাক। সেজন্য তিন সদস্যের একটি কমিটিও গঠন করা হবে। যারা বেফাকের নেয়া এসব সিদ্ধান্ত নিয়ে সরকারের প্রতিনিধির সঙ্গে আলোচনা করবেন।’

বৈঠকে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মাহমুদুল হাসান, নুরুল ইসলাম, মাহফুজুল হক, আব্দুল কুদ্দুস, আব্দুল হামীদ (পীর সাহেব মধুপুর) সহ অনেকে।

আল-হাইআতুল উলয়ার অফিস সম্পাদক অছিউর রহমান স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সভায় বর্তমান পরিস্থিতিতে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হল-

০১. কওমি মাদরাসা সম্পর্কিত যাবতীয় বিষয়ে সিদ্ধান্ত ও পদক্ষেপ গ্রহণ করবে একমাত্র আল-হাইআতুল উলয়া। আল-হাইআতুল উলয়ার অধীন এক বা একাধিক বোর্ড কিংবা কোন সংগঠন বা ব্যক্তি আল-হাইআতুল উলয়ার সিদ্ধান্ত ছাড়া পৃথকভাবে কওমি মাদরাসা বিষয়ক কোনো সিদ্ধান্ত বা পদক্ষেপ বা উদ্যোগ গ্রহণ করতে পারবে না।

০২. কওমি মাদরাসার ছাত্র ও শিক্ষকরা প্রচলিত সর্বপ্রকার রাজনীতি থেকে মুক্ত থাকবে মর্মে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

০৩. আল-হাইআতুল উলয়ার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য এবং কওমি মাদরাসা সম্পর্কিত যাবতীয় বিষয়ে সিদ্ধান্তগ্রহণ ও তত্ত্বাবধানের জন্য আল-হাইআতুল উলয়ার অধীন।

০৪. বোর্ডের পাঁচজন, বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া থেকে পাঁচজন এবং চেয়ারম্যান মনোনীত পাঁচজন সমন্বয়ে সর্বমোট ১৫ জনের একটি ‘বাস্তবায়ন সাব-কমিটি’ গঠিত হবে।

০৫. উদ্ভূত পরিস্থিতিতে কওমি মাদরাসার যেসব নিরীহ ছাত্র, শিক্ষক, আলেম-ওলামা, ধর্মপ্রাণ মুসলমান এবং মসজিদের ইমাম ও মুসল্লিদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, রমযানের এ রহমতের মাস বিবেচনায় সরকারের কাছে তাদের মুক্তির আহ্বান জানানো হয়।

০৬. নিরীহ আলেম-ওলামা, মাদরাসার ছাত্র ও ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের হয়রানী না করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা হয়।

এ ছাড়া বিবৃতিতে বলা হয়, পবিত্র রমযান কোরআন তেলাওয়াতের মাস। কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে বালা-মুসিবত ও মহামারি দূর হয়। তাই রমযানের মধ্যেই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক ঘোষিত স্বাস্থ্যবিধি মেনে হিফজ ও মক্তব বিভাগ খুলে দেয়ার জন্য এবং রমযানের পর কওমি মাদরাসার শিক্ষাকার্যক্রম চালু করার জন্য সরকারের কাছে বিশেষভাবে আবেদন করা হয়েছে।

আল-হাইআতুল উলয়ার সভার সিদ্ধান্ত সম্পর্কে সরকারকে অবহিত করার জন্য ৩ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল গঠন করা হয়েছে। এই প্রতিনিধি দল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। কমিটির সদস্যরা হলেন: মাওলানা মুফতি রুহুল আমীন, মাওলানা মুফতি মোহাম্মদ আলী ও মাওলানা মুফতি জসীমুদ্দীন।