০৮:৪৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এশিয়া কাপ : চাপ সামলাতে ব্যর্থ হওয়ার কথাই বললেন সাকিব

  • Reporter Name
  • Update Time : ১১:৩৯:৪৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২ সেপ্টেম্বর ২০২২
  • 23

গ্রুপ পর্বে শেষ ম্যাচে শ্রীলংকার কাছে হেরে এশিয়া কাপের ১৫তম আসর থেকে হতাশা নিয়ে বিদায় নিতে হয়েছে বাংলাদেশকে। ম্যাচের লাগাম হাতে থাকার পর শেষদিকে খেই হারিয়ে হার বরণ করতে হয় টাইগারদের। শ্রীলংকার কাছে মাত্র ২ উইকেটে হারের পর বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসান মনে করেন, আবারও প্রমান হলো চাপে ভেঙ্গে পড়ে দল।
দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ব্যাট হাতে জ¦লে উঠে বাংলাদেশের ব্যাটাররা। ইনিংসের শুরু থেকেই শ্রীলংকার বোলারদের উপর ঝড় বইয়ে দেন মেইকশিপ্ট ওপেনার মেহেদি হাসান মিরাজ। ২৬ বলে ৩৮ রান করেন মিরাজ। মিডল-অর্ডারে আফিফ হোসেন ২২ বলে ৩৯ ও শেষ দিকে ৯ বলে ঝড়ো গতিতে ২৪ রান তুলেন মোসাদ্দেক হোসেন। এতে ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৮৩ রানের বড় সংগ্রহ পায় বাংলাদেশ।
এরপর শ্রীলংকার ব্যাটারদের চাপে রাখে বাংলাদেশের বোলাররা। অভিষেক ম্যাচ খেলতে নামা পেসার এবাদত হোসেন ও তাসকিন আহমেদের বোলিং নৈপুন্যে ১৪১ রানেই ৬ উইকেটের পতন ঘটেছিলো শ্রীলংকা। শেষ ৪ ওভারে ৪৩ রান প্রয়োজন ছিলো লংকানদের। আর শেষ ২ ওভারে ৩ উইকেট হাতে নিয়ে ২৫ রানের দরকার পড়ে টাইগারদের। কিন্তু ১৯তম ও নিচেজর চতুর্থ ওভারে নিজের সেরাটা দিতে পারেননি এবাদত। প্রথম ৩ ওভারে ৩৫ রানে ৩ উইকেট নিয়েছিলেন এবাদত।
১৯তম ওভারে নো বল-ওয়াইডসহ ২টি চারে ১৭ রান দেন এবাদত। এতে শেষ ওভারে ৮ রানের দরকার পড়ে শ্রীলংকার।
শেষ ওভারে বল হাতে নিয়ে দ্বিতীয় বলে চার হজম করেন স্পিনার মাহেদি হাসান। তৃতীয় বলে নো-বলসহ ৩ রান দেন মাহেদি। এতে অবিস্মরনীয়ভাবে ম্যাচ জিতে যায়  শ্রীলংকা। শেষ মুর্হূতে এসে তীরে এসে তরি ডুবে বাংলাদেশের।
তাই অধিনায়কের সাকিবের মতে, আরও একবার চাপের মুখে ভেঙ্গে পড়ে বাংলাদেশ। সংবাদ সম্মেলনে সাকিব বলেন, ‘আমি মনে করি শেষ দিকে, আমরা ভালো বল করিনি। আমরা বেশ ভালো ব্যাটিং করেছি। আমরা যা আশা করেছি তার চেয়ে ১০-১৫ রান বেশিই করেছি। বল হাতেও আমরা ভালো শুরু করি, আমরা নিয়মিত উইকেট নিয়েছি। বাজে ফিল্ডিং এবং স্পিনারের কাছ থেকে দু’টি নো-বল, এসব আপনি আপনার দল থেকে আশা করবেন না। আমরা এখনও চাপের মধ্যে ভেঙ্গে পড়ি।’
ম্যাচ হারলেও, এখান থেকে অনেক ইতিবাচক বিষয় ছিলো বলেও মনে করেন সাকিব, ‘এ ম্যাচ থেকে বেশ কিছু ইতিবাচক বিষয় আছে। আমাদের এখন সামনের দিকে তাকানো উচিত। আমরা আস্তে-আস্তে এগোচ্ছি। যেভাবে আমরা শেষ ৬-১২ মাস খেলেছি, তার চেয়ে এটা উন্নতির। তবে এটা এই টুর্নামেন্টের জন্য যথেষ্ট ছিল না। আমাদের ভিন্ন পরিকল্পনা নিয়ে এগোতে  হবে, যাতে আমরা অস্ট্রেলিয়ায় (টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ) ভালো করতে পারি।’
প্রথম ৩ ওভারে দুর্দান্ত বোলিং করলেও, নিজের চতুর্থ ও শেষ ওভারে ব্যর্থ হন এবাদত। ঐ ওভারে তার ১৭ রান  বাংলাদেশকে হারের মুখে ঠেলে দেয়।  তবে ম্যাচ হারের জন্য এবাদতের দোষ দিতে নারাজ সাকিব। তিনি বলেন, ‘আমার ধারণা, এমন চাপের ম্যাচ এর আগে সে খেলেনি। অভিষেক হলো আজ। টেস্ট খেলেছে, ওয়ানডে একটি-দু’টির বেশি খেলেনি। টেস্ট খেলছে নিয়মিত। কিন্তু এমন চাপের পরিস্থিতিতে এত বড় মঞ্চে এই প্রথম মাঠে ছিল। ওর অনেক কিছু শেখার আছে। প্রথম ২ ওভারে যেভাবে বোলিং করেছে, সে আমাদের ম্যাচে রেখেছিল । তারপর থেকে স্বাভাবিকভাবে আমরা ভেবেছিলাম, আজকের দিনটা তারই হতে পারে।  আজকে আমাদের সবচেয়ে ভালো বোলার হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রত্যাশা করাই যায়, যেহেতু প্রথম ২ ওভারে ৩ উইকেট নিয়েছে। তার ছন্দ ভালো থাকবে, সে অনেক ইতিবাচক অবস্থায় থাকবে। এমন পরিস্থিতিতে মানসিকভাবে অনেক ভালো অবস্থায় চলে আসে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে হয়নি। আমার ধারণা, অনেক কিছু সে এই ম্যাচ থেকে শিখতে পারবে।’
শেষ চার ওভারে ১১ ও শেষ ২ ওভারে ১২ রানের বেশি আস্কিং রেট দরকার ছিলো শ্রীলংকার। কিন্তু শেষ দিকে শ্রীলংকার রানকে আটকাতে পারেনি বাংলাদেশের বোলাররা। তাই ডেথ ওভারে বোলারদের আরও উন্নতি চান সাকিব। তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয় কয়েকটি বাজে ওভার আমাদের ম্যাচ হারিয়ে দিয়েছে। শেষ ওভারের আগেই তারা ৮ উইকেট হারিয়েছে। যদিও তারা চার বল হাতে রেখেই জিতে গেছে। এর মানে হচ্ছে ডেথ বোলিংয়ে আমরা ভালো করিনি। আমাদের বোলাররা পরিকল্পনা কাজে লাগাতে পারেনি। এ কারণে স্পিনারদের দিয়ে শেষ ওভার করাতে হয়। শেষ ছয় মাসে আমরা ভালো খেলিনি। তবে শেষ দুই ম্যাচে আমরা ভালো খেলেছি।’
বল হাতে  এবাদত ৬টি ওয়াইড ও ২টি নো-বল দেন। ২টি নো-বল দেন স্পিনার মাহেদিও। নো-বল ও ক্যাচ মিসের সুযোগ জীবন পেয়ে ৩৭ বলে ৬০ রানের ইনিংস খেলেন কুশল মেন্ডিস। এমনকি উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়েও জীবন পান কুশল। তাই সাকিবের চোখে, স্পিনারদের নো-বল একরকম অপরাধ।
তিনি বলেন, ‘অনেক সময় পেস বোলাররা ‘নো’ বল করে। স্পিনারদের ‘নো’ বল করা অবশ্যই অপরাধ। সাধারণত আমাদের স্পিনাররা কখনও এরকম ‘নো’ বল করে না। আজকে যেহেতু একটা চাপের ম্যাচ ছিল, বোঝা গেল যে আমরা চাপে এখনও কতটা ভেঙে পড়তে পারি। তাই এই জায়গাগুলোতে আমাদের অবশ্যই উন্নতি করতে হবে।’
সাকিব আরও যোগ করে বলেন, ‘কোন অধিনায়কই চায় না, ‘নো’ বল হোক। অবশ্যই এটা একটা অপরাধ। স্পিনার ‘নো’ বল করলে সেটি বড় একটা অপরাধ। তবে আমাদের আরও অনেক জায়গা আছে উন্নতি করার। আজ আমরা অনেক ‘নো’ আর ওয়াইড করেছি, যা ভালো দিক নয়। আমরা চাপে ছিলাম, বুঝতে পারছিলাম না কি করা উচিত। এটা এমন একটা চাপের ম্যাচ সামনে এগিয়ে যাওয়ার জন্য যেখান থেকে আমরা শিখতে পারি।’
বিশ^কাপের আগে শেখার আরও সুযোগ পাচ্ছে বাংলাদেশ। সেই সুযোগগুলো ভালোভাবে কাজে লাগাতে চান সাকিব। তিনি বলেন, ‘বিশ্বকাপের আগে নিউজিল্যান্ডে আমাদের ম্যাচ আছে। এগুলো অনেক সাহায্য করবে। এটা আমাদের জন্য চোখ খুলে দেওয়ার মতো ব্যাপার যে, পেসাররা চাপের সময় কেমন বোলিং করে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই ধরনের উইকেটে, পেসারদের ১২ ওভার বোলিং করতে হবে। আমি বলছি না, ১২ ওভার করতেই হবে। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ৩ পেসারের কাছ থেকে ১২ ওভার প্রত্যাশিত থাকবে। অন্তত ভালো ১০ ওভার প্রত্যাশা করবেন।  অন্যান্য দেশগুলো হয়তো ১৪-১৫ ওভার পর্যন্ত প্রত্যাশা করে পেসারদের কাছ থেকে। সেখান থেকে আমরা ১০-১২ ওভার প্রত্যাশা করছি। আর এটা পেস বোলারদের ডেলিভার করতেই হবে। যারা ডেলিভার করতে পারবে, তারা থাকবে। যারা পারবে না, আসলে তারা থাকবে না। খুবই সহজ হিসাব এখানে।’
এশিয়া কাপের গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নেয়ায় হতাশ ক্রিকেটপ্রেমিরা। তাদের উদ্দেশ্যেও বার্তা দিয়েছেন সাকিব, ‘ভক্তদের জন্য সত্যিই খারাপ লাগছে। আমরা যেখানেই যাই, তারা সব সময় আমাদের সমর্থন যোগাতে চলে আসেন। সব সময় আমাদের পাশে থাকেন। আমাদের জিততে দেখতে চান। আশা করছি, সামনে তাদের জন্য ভালো করবো।’

Tag :
About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

একুশে ফেব্রুয়ারির প্রথম প্রহরে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা

এশিয়া কাপ : চাপ সামলাতে ব্যর্থ হওয়ার কথাই বললেন সাকিব

Update Time : ১১:৩৯:৪৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২ সেপ্টেম্বর ২০২২

গ্রুপ পর্বে শেষ ম্যাচে শ্রীলংকার কাছে হেরে এশিয়া কাপের ১৫তম আসর থেকে হতাশা নিয়ে বিদায় নিতে হয়েছে বাংলাদেশকে। ম্যাচের লাগাম হাতে থাকার পর শেষদিকে খেই হারিয়ে হার বরণ করতে হয় টাইগারদের। শ্রীলংকার কাছে মাত্র ২ উইকেটে হারের পর বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসান মনে করেন, আবারও প্রমান হলো চাপে ভেঙ্গে পড়ে দল।
দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ব্যাট হাতে জ¦লে উঠে বাংলাদেশের ব্যাটাররা। ইনিংসের শুরু থেকেই শ্রীলংকার বোলারদের উপর ঝড় বইয়ে দেন মেইকশিপ্ট ওপেনার মেহেদি হাসান মিরাজ। ২৬ বলে ৩৮ রান করেন মিরাজ। মিডল-অর্ডারে আফিফ হোসেন ২২ বলে ৩৯ ও শেষ দিকে ৯ বলে ঝড়ো গতিতে ২৪ রান তুলেন মোসাদ্দেক হোসেন। এতে ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৮৩ রানের বড় সংগ্রহ পায় বাংলাদেশ।
এরপর শ্রীলংকার ব্যাটারদের চাপে রাখে বাংলাদেশের বোলাররা। অভিষেক ম্যাচ খেলতে নামা পেসার এবাদত হোসেন ও তাসকিন আহমেদের বোলিং নৈপুন্যে ১৪১ রানেই ৬ উইকেটের পতন ঘটেছিলো শ্রীলংকা। শেষ ৪ ওভারে ৪৩ রান প্রয়োজন ছিলো লংকানদের। আর শেষ ২ ওভারে ৩ উইকেট হাতে নিয়ে ২৫ রানের দরকার পড়ে টাইগারদের। কিন্তু ১৯তম ও নিচেজর চতুর্থ ওভারে নিজের সেরাটা দিতে পারেননি এবাদত। প্রথম ৩ ওভারে ৩৫ রানে ৩ উইকেট নিয়েছিলেন এবাদত।
১৯তম ওভারে নো বল-ওয়াইডসহ ২টি চারে ১৭ রান দেন এবাদত। এতে শেষ ওভারে ৮ রানের দরকার পড়ে শ্রীলংকার।
শেষ ওভারে বল হাতে নিয়ে দ্বিতীয় বলে চার হজম করেন স্পিনার মাহেদি হাসান। তৃতীয় বলে নো-বলসহ ৩ রান দেন মাহেদি। এতে অবিস্মরনীয়ভাবে ম্যাচ জিতে যায়  শ্রীলংকা। শেষ মুর্হূতে এসে তীরে এসে তরি ডুবে বাংলাদেশের।
তাই অধিনায়কের সাকিবের মতে, আরও একবার চাপের মুখে ভেঙ্গে পড়ে বাংলাদেশ। সংবাদ সম্মেলনে সাকিব বলেন, ‘আমি মনে করি শেষ দিকে, আমরা ভালো বল করিনি। আমরা বেশ ভালো ব্যাটিং করেছি। আমরা যা আশা করেছি তার চেয়ে ১০-১৫ রান বেশিই করেছি। বল হাতেও আমরা ভালো শুরু করি, আমরা নিয়মিত উইকেট নিয়েছি। বাজে ফিল্ডিং এবং স্পিনারের কাছ থেকে দু’টি নো-বল, এসব আপনি আপনার দল থেকে আশা করবেন না। আমরা এখনও চাপের মধ্যে ভেঙ্গে পড়ি।’
ম্যাচ হারলেও, এখান থেকে অনেক ইতিবাচক বিষয় ছিলো বলেও মনে করেন সাকিব, ‘এ ম্যাচ থেকে বেশ কিছু ইতিবাচক বিষয় আছে। আমাদের এখন সামনের দিকে তাকানো উচিত। আমরা আস্তে-আস্তে এগোচ্ছি। যেভাবে আমরা শেষ ৬-১২ মাস খেলেছি, তার চেয়ে এটা উন্নতির। তবে এটা এই টুর্নামেন্টের জন্য যথেষ্ট ছিল না। আমাদের ভিন্ন পরিকল্পনা নিয়ে এগোতে  হবে, যাতে আমরা অস্ট্রেলিয়ায় (টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ) ভালো করতে পারি।’
প্রথম ৩ ওভারে দুর্দান্ত বোলিং করলেও, নিজের চতুর্থ ও শেষ ওভারে ব্যর্থ হন এবাদত। ঐ ওভারে তার ১৭ রান  বাংলাদেশকে হারের মুখে ঠেলে দেয়।  তবে ম্যাচ হারের জন্য এবাদতের দোষ দিতে নারাজ সাকিব। তিনি বলেন, ‘আমার ধারণা, এমন চাপের ম্যাচ এর আগে সে খেলেনি। অভিষেক হলো আজ। টেস্ট খেলেছে, ওয়ানডে একটি-দু’টির বেশি খেলেনি। টেস্ট খেলছে নিয়মিত। কিন্তু এমন চাপের পরিস্থিতিতে এত বড় মঞ্চে এই প্রথম মাঠে ছিল। ওর অনেক কিছু শেখার আছে। প্রথম ২ ওভারে যেভাবে বোলিং করেছে, সে আমাদের ম্যাচে রেখেছিল । তারপর থেকে স্বাভাবিকভাবে আমরা ভেবেছিলাম, আজকের দিনটা তারই হতে পারে।  আজকে আমাদের সবচেয়ে ভালো বোলার হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রত্যাশা করাই যায়, যেহেতু প্রথম ২ ওভারে ৩ উইকেট নিয়েছে। তার ছন্দ ভালো থাকবে, সে অনেক ইতিবাচক অবস্থায় থাকবে। এমন পরিস্থিতিতে মানসিকভাবে অনেক ভালো অবস্থায় চলে আসে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে হয়নি। আমার ধারণা, অনেক কিছু সে এই ম্যাচ থেকে শিখতে পারবে।’
শেষ চার ওভারে ১১ ও শেষ ২ ওভারে ১২ রানের বেশি আস্কিং রেট দরকার ছিলো শ্রীলংকার। কিন্তু শেষ দিকে শ্রীলংকার রানকে আটকাতে পারেনি বাংলাদেশের বোলাররা। তাই ডেথ ওভারে বোলারদের আরও উন্নতি চান সাকিব। তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয় কয়েকটি বাজে ওভার আমাদের ম্যাচ হারিয়ে দিয়েছে। শেষ ওভারের আগেই তারা ৮ উইকেট হারিয়েছে। যদিও তারা চার বল হাতে রেখেই জিতে গেছে। এর মানে হচ্ছে ডেথ বোলিংয়ে আমরা ভালো করিনি। আমাদের বোলাররা পরিকল্পনা কাজে লাগাতে পারেনি। এ কারণে স্পিনারদের দিয়ে শেষ ওভার করাতে হয়। শেষ ছয় মাসে আমরা ভালো খেলিনি। তবে শেষ দুই ম্যাচে আমরা ভালো খেলেছি।’
বল হাতে  এবাদত ৬টি ওয়াইড ও ২টি নো-বল দেন। ২টি নো-বল দেন স্পিনার মাহেদিও। নো-বল ও ক্যাচ মিসের সুযোগ জীবন পেয়ে ৩৭ বলে ৬০ রানের ইনিংস খেলেন কুশল মেন্ডিস। এমনকি উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়েও জীবন পান কুশল। তাই সাকিবের চোখে, স্পিনারদের নো-বল একরকম অপরাধ।
তিনি বলেন, ‘অনেক সময় পেস বোলাররা ‘নো’ বল করে। স্পিনারদের ‘নো’ বল করা অবশ্যই অপরাধ। সাধারণত আমাদের স্পিনাররা কখনও এরকম ‘নো’ বল করে না। আজকে যেহেতু একটা চাপের ম্যাচ ছিল, বোঝা গেল যে আমরা চাপে এখনও কতটা ভেঙে পড়তে পারি। তাই এই জায়গাগুলোতে আমাদের অবশ্যই উন্নতি করতে হবে।’
সাকিব আরও যোগ করে বলেন, ‘কোন অধিনায়কই চায় না, ‘নো’ বল হোক। অবশ্যই এটা একটা অপরাধ। স্পিনার ‘নো’ বল করলে সেটি বড় একটা অপরাধ। তবে আমাদের আরও অনেক জায়গা আছে উন্নতি করার। আজ আমরা অনেক ‘নো’ আর ওয়াইড করেছি, যা ভালো দিক নয়। আমরা চাপে ছিলাম, বুঝতে পারছিলাম না কি করা উচিত। এটা এমন একটা চাপের ম্যাচ সামনে এগিয়ে যাওয়ার জন্য যেখান থেকে আমরা শিখতে পারি।’
বিশ^কাপের আগে শেখার আরও সুযোগ পাচ্ছে বাংলাদেশ। সেই সুযোগগুলো ভালোভাবে কাজে লাগাতে চান সাকিব। তিনি বলেন, ‘বিশ্বকাপের আগে নিউজিল্যান্ডে আমাদের ম্যাচ আছে। এগুলো অনেক সাহায্য করবে। এটা আমাদের জন্য চোখ খুলে দেওয়ার মতো ব্যাপার যে, পেসাররা চাপের সময় কেমন বোলিং করে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই ধরনের উইকেটে, পেসারদের ১২ ওভার বোলিং করতে হবে। আমি বলছি না, ১২ ওভার করতেই হবে। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ৩ পেসারের কাছ থেকে ১২ ওভার প্রত্যাশিত থাকবে। অন্তত ভালো ১০ ওভার প্রত্যাশা করবেন।  অন্যান্য দেশগুলো হয়তো ১৪-১৫ ওভার পর্যন্ত প্রত্যাশা করে পেসারদের কাছ থেকে। সেখান থেকে আমরা ১০-১২ ওভার প্রত্যাশা করছি। আর এটা পেস বোলারদের ডেলিভার করতেই হবে। যারা ডেলিভার করতে পারবে, তারা থাকবে। যারা পারবে না, আসলে তারা থাকবে না। খুবই সহজ হিসাব এখানে।’
এশিয়া কাপের গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নেয়ায় হতাশ ক্রিকেটপ্রেমিরা। তাদের উদ্দেশ্যেও বার্তা দিয়েছেন সাকিব, ‘ভক্তদের জন্য সত্যিই খারাপ লাগছে। আমরা যেখানেই যাই, তারা সব সময় আমাদের সমর্থন যোগাতে চলে আসেন। সব সময় আমাদের পাশে থাকেন। আমাদের জিততে দেখতে চান। আশা করছি, সামনে তাদের জন্য ভালো করবো।’