1. [email protected] : নিজস্ব প্রতিবেদক :
  2. [email protected] : rahad :
একশ বছরে প্রথম ঋণখেলাপি রাশিয়া | JoyBD24
বুধবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৪:৩৮ অপরাহ্ন

একশ বছরে প্রথম ঋণখেলাপি রাশিয়া

রিপোর্টারের নাম
  • প্রকাশিত: শুক্রবার, ১ জুলাই, ২০২২

১০০ বছরেরও বেশি সময় পর প্রথমবারের মতো বৈদেশিক ঋণের কিস্তি পরিশোধে ব্যর্থ হয়েছে রাশিয়া। রোববারের মধ্যে ১ হাজার কোটি ডলার পরিশোধ করার কথা ছিল দেশটির। ব্লুমবার্গের বরাত দিয়ে বিবিসি এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

এ প্রসঙ্গে রুশ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, রাশিয়ার কাছে অর্থ রয়েছে এবং ঋণ পরিশোধের জন্য দেশটি ইচ্ছুক। কিন্তু আন্তর্জাতিক বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞার কারণে ঋণদাতাদের অর্থ প্রদান করা অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই অবস্থায় রাশিয়া ভবিষ্যতে আর কোনো বৈদেশিক ঋণ নেবে না বলে জানিয়েছে দেশটির অর্থমন্ত্রী সিলুয়ানভ।বিবিসি জানিয়েছে, ঋণ খেলাপি হওয়া যে কোনোভাবে এড়াতে চাইছিল ক্রেমলিন। কারণ এটা রাশিয়ার মর্যাদার ওপর বড় ধরনের ধাক্কা।বর্তমানে রাশিয়ার বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ ৪ হাজার কোটি ডলার। আর জ্বালানি সরবরাহ করে দৈনিক ১০০ কোটি ডলার আয় করছে দেশটি।এর আগে, রাশিয়া বিদেশি ঋণে শেষবার খেলাপি হয়েছিল ১৯১৮ সালে, বলশেভিক বিপ্লবের সময় কমিউনিস্ট নেতা ভ্লাদিমির লেনিন জারশাসিত রুশ সাম্রাজ্যের ঋণ পরিশোধ করতে অস্বীকার করেছিলেন।

এ ছাড়া ১৯৯৮ সালে অভ্যন্তরীণ ঋণ পরিশোধে রাশিয়া ব্যর্থ হয়েছিল। প্রেসিডেন্ট বরিস ইয়েলেৎসিনের মেয়াদের শেষ দিকে ওই সময়টায় রাশিয়া মারাত্মক রুবল সঙ্কটে ভুগছিল। সে কারণে অভ্যন্তরীণ বন্ডের সুদ দিতে ব্যর্থ হলেও বিদেশি ঋণে খেলাপি হওয়া এড়াতে পেরেছিল মস্কো।কিন্তু এবার সেটা এড়ানো সম্ভব হয়নি যুক্তরাষ্ট্র ও তাদের ইউরোপীয় মিত্রদের রাশিয়ার ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞার কারণে।বিশ্বের প্রধান আন্তর্জাতিক লেনদেন পরিষেবা সুইফট থেকেও রাশিয়ার বড় ব্যাংকগুলোকে বাদ দেয়া হয় গত ফেব্রুয়ারিতে। ফলে রাশিয়ার রপ্তানি বাণিজ্যও মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্ত হয়। কারণ নিষেধাজ্ঞার কারণে রাশিয়ার পণ্য কিনে এখন ডলারে দাম পরিশোধ করা সম্ভব হচ্ছে না কোনো দেশের পক্ষে।

রাশিয়া সরকার বলেছে, তারা তাদের সব কিস্তিই সময়মতো পরিশোধ করতে চায় এবং রোববারের আগ পর্যন্ত তা পরিশোধ করতে তারা সক্ষমও হয়েছে। যুদ্ধ শুরুর পর থেকে গত চার মাসে দেশে ও দেশের বাইরে ৪০ বিলিয়ন ডলারের ঋণ তারা ডলার অথবা ইউরোতে শোধ করেছে।রাশিয়ার কাছে ১৫টি আন্তর্জাতিক বন্ড রয়েছে যেগুলোর অভিহিত মূল্যে দেনার পরিমাণ প্রায় ৪০০ কোটি ডলার। যার অর্ধেকই আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের কাছে দেনা হিসেবে রয়েছে। এরকমই একটি বন্ডের কিস্তি বাবদ ১০ কোটি ডলার পরিশোধে ব্যর্থ হয়ে খেলাপি হতে হলো মস্কোকে।এই কিস্তি পরিশোধের নির্ধারিত তারিখ আসলে ছিল ২৭ মে। ইউরোক্লিয়ার ব্যাংকের মাধ্যমে ওই অর্থ বিনিয়োগকারীদের হাতে পৌঁছানোর কথা ছিল। কিন্তু সেখানেই অর্থ আটকে যায়।

স্বার্বভৌম ঋণের কিস্তি নির্ধারিত তারিখে দিতে না পারলে ৩০ দিনের অন্তর্বর্তী সময় পাওয়া যায়। সেই সময়ের মধ্যে কিস্তি গ্রাহকের হাতে পৌঁছাতে পারলে খেলাপি হওয়া এড়ানো যায়। সেই একমাস রোববার শেষ হয়েছে, তার মধ্যে কিস্তি শোধ করার উপায় রাশিয়ার ছিল না।ইউরোক্লিয়ার বলেছে, তারা রাশিয়ার কিস্তির অর্থ আটকে দেয়নি, কিন্তু নিষেধাজ্ঞা মানতে তারা বাধ্য।রাশিয়া ঋণ খেলাপি হতে পারে, এ সম্ভাবনা গত ফেব্রুয়ারিতেও কারো মাথায় আসেনি। তাদের লেনদেন চিত্র সবসময় ভালো অবস্থাতেই ছিল।
যেসব দেশ খেলাপি হয়, আন্তর্জাতিক পুঁজিবাজারে তাদের প্রবেশাধিকার রহিত হয়, যদিও বর্তমান প্রেক্ষাপটে রাশিয়া এমনিতেই আন্তর্জাতিক বাজার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে। তারপরও একবার খেলাপি হলে এর পরিণতি আরো অনেক দূর গড়াতে পারে।

এর ফলে বিনিয়োগকারীরা ক্রেডিট ডিফল্ট সোয়াপস (সিডিএস) নিয়মের দ্বারস্থ হতে পারেন। অর্থাৎ সেসব বন্ডের বিপরীতে বীমা করা থাকলে বিনিয়োগকারীরা এখন সেখান থেকে টাকা চাইতে পারেন। ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক জেপি মরগানের হিসাবে এরকম বীমা দাবির পরিমাণ দাঁড়াতে পারে ৬ বিলিয়ন ডলার।শুধু আন্তর্জাতিক সম্পদ ব্যবস্থাপনাকারীরাই রাশিয়ার বৈদেশিক ঋণের সঙ্গে যুক্ত নয়, অনেক রুশ বিনিয়োগকারীও পশ্চিমা ব্যাংকের মাধ্যমে ওই বন্ড কিনেছেন। যেহেতু এই বন্ডগুলো রাশিয়ার ব্যাংকগুলোরও মূলধনের একটি অংশের যোগান দিচ্ছে, তাই ওইসব ব্যাংকও সমস্যায় পড়তে পারে।

মস্কো খেলাপি হওয়ায় রাশিয়া কর্পোরেট মহলও ভুগতে পারে। যেহেতু তারা আন্তর্জাতিক পুঁজিবাজার থেকেই তাদের বিনিয়োগ সংগ্রহ করে থাকেন, যার পরিমাণ প্রায় ১০ হাজার কোটি ডলার।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2012 joybd24
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: Joybd24