০৫:০৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঈ‌দে ঘর ফেরা মানু‌ষের ও তীব্র জানজ‌টে ঢাকা অচল হ‌য়ে পড়ার শংকা!

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৪:০৭:২৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ এপ্রিল ২০২২
  • 27

এবার পবিত্র ঈদুল ফিতরে প্রায় দ্বিগুণ মানুষ গ্রামের বাড়ি যাবে। আগামী ২৫ রমজান থেকে ঈদের আগের দিন পর্যন্ত দুপুরের পর থেকে গভীর রাত অবধি রাজধানী অচল হয়ে যেতে পারে। যানজট ও নানা অব্যবস্থাপনার কারণে গণপরিবহনে সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত করা না গেলে এবারের ঈদযাত্রায় ভয়ংকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে।

আজ রোববার সকালে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ‘ঈদযাত্রায় অসহনীয় যানজট, পথে পথে যাত্রী হয়রানি, অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্য ও সড়ক দুর্ঘটনা বন্ধের দাবি’ শিরোনামে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব আশঙ্কা প্রকাশ করেছে যাত্রী কল্যাণ সমিতি। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনটির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী।

যাত্রী কল্যাণ সমিতির বক্তব্যের সঙ্গে একমত পোষণ করেন বুয়েটের দুর্ঘটনা গবেষণাকেন্দ্রের পরিচালক মো. হাদিউজ্জামান। তিনি মনে করেন, এবার চাহিদা বেশি হওয়ায় সড়কের ব্যবস্থাপনা কোমায় চলে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে হাদিউজ্জামান বলেন, ‘দুর্ঘটনা গবেষণাকেন্দ্রের ২০১৮ ও ২০১৯ সালের তথ্য বলছে, ১ কোটি ১৫ লাখ মানুষ ঈদের সময় বাড়িতে গেছে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে গত দুই বছরে চার ঈদে মানুষ গ্রামে কম গেছে। আমাদের তথ্য বলছে, প্রতি ঈদে কমপক্ষে ৬০ লাখ মানুষ গ্রামে গেছেন। আমাদের চলমান একটি গবেষণায় দেখা গেছে, ঈদের আগে চার দিনে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৩০ লাখ মানুষ ঢাকা ছাড়বেন। এ সময় প্রতিদিন বাসে ৮ লাখ, ট্রেনে ১ লাখ, লঞ্চে দেড় লাখ, ব্যক্তিগত গাড়িতে প্রায় ৪ লাখ, মোটরসাইকেলে প্রায় ৪ লাখ মানুষ ঢাকা ছাড়তে পারবেন। বাকি প্রায় ১২-১৩ লাখ মানুষ ঢাকা ছাড়বে ট্রাক, ট্রেনের ছাদে করে। তখন দুর্ঘটনার ঝুঁকি বেড়ে যাবে।’

হাদিউজ্জামান আরও বলেন, স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ২০ রমজানের পর বন্ধ হয়ে যাবে। পরিবারের সদস্যরা, যাদের কাজ নেই, তাদেরকে ২০ রমজান থেকে বাড়িতে পাঠিয়ে দিতে হবে। যাঁরা কর্মজীবী, ছুটি পেলে তাঁরা পরে যাবেন। তাহলে কিছুটা স্বস্তি মিলতে পারে।

যাত্রী কল্যাণ সমিতি মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী লিখিত বক্তব্যে বলেন, এবারের ঈদযাত্রায় রাজধানীবাসী যানজটের কারণে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়বে। তাই এই মুহূর্ত থেকে রাজধানীর সব ফুটপাত, রাস্তা হকার ও অবৈধ পার্কিংমুক্ত করার জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কাছে দাবি জানান তিনি।

মোজাম্মেল হক চৌধুরী আরও বলেন, রাজধানী থেকে দেশের বিভিন্ন জেলায় যাতায়াতের প্রবেশদ্বারগুলো বিশেষ করে যাত্রাবাড়ী, সায়েদাবাদ, বাবুবাজার ব্রিজ, পোস্তগোলা, টঙ্গী রেলস্টেশন, শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার উড়ালসেতু, মীরের বাজার, উলুখোলা, কাঞ্চন ব্রিজ, গাবতলী মাজার রোড, মীরের ধৌর, আশুলিয়া, ইপিজেড, চন্দ্রা, রায়েরবাজার শহীদ বুদ্ধিজীবী সেতু, জিঞ্জিরা, কেরানীগঞ্জ, হাতিরঝিল, মহাখালী, রামপুরা, শেখের জায়গা, আমুলিয়া, ডেমরা, সুলতানা কামাল ব্রিজ, চিটাগাং রোড, কাঁচপুর, মদনপুর, মেঘনা টোল, ভুলতা, গাউছিয়া, বরফা অন্যদিকে বিআরটি নির্মাণাধীন প্রকল্পের কারণে উত্তরা থেকে গাজীপুর পর্যন্ত যাতায়াতে মানুষকে অসহনীয় যানজটে পড়তে হবে। এসব যানজট নিয়ন্ত্রণে রাস্তার মোড় পরিষ্কার রাখা ও ছোট যানবাহন বিশেষ করে রিকশা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, ইজিবাইক প্রধান সড়কে চলাচল বন্ধে পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানান। তা না হলে আগামী ২৫ রমজান থেকে ঈদের দিন পর্যন্ত দুপুরের পর থেকে গভীর রাত অবধি রাজধানী অচল হয়ে যাবে।

Tag :
About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

একুশে ফেব্রুয়ারির প্রথম প্রহরে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা

ঈ‌দে ঘর ফেরা মানু‌ষের ও তীব্র জানজ‌টে ঢাকা অচল হ‌য়ে পড়ার শংকা!

Update Time : ০৪:০৭:২৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ এপ্রিল ২০২২

এবার পবিত্র ঈদুল ফিতরে প্রায় দ্বিগুণ মানুষ গ্রামের বাড়ি যাবে। আগামী ২৫ রমজান থেকে ঈদের আগের দিন পর্যন্ত দুপুরের পর থেকে গভীর রাত অবধি রাজধানী অচল হয়ে যেতে পারে। যানজট ও নানা অব্যবস্থাপনার কারণে গণপরিবহনে সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত করা না গেলে এবারের ঈদযাত্রায় ভয়ংকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে।

আজ রোববার সকালে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ‘ঈদযাত্রায় অসহনীয় যানজট, পথে পথে যাত্রী হয়রানি, অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্য ও সড়ক দুর্ঘটনা বন্ধের দাবি’ শিরোনামে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব আশঙ্কা প্রকাশ করেছে যাত্রী কল্যাণ সমিতি। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনটির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী।

যাত্রী কল্যাণ সমিতির বক্তব্যের সঙ্গে একমত পোষণ করেন বুয়েটের দুর্ঘটনা গবেষণাকেন্দ্রের পরিচালক মো. হাদিউজ্জামান। তিনি মনে করেন, এবার চাহিদা বেশি হওয়ায় সড়কের ব্যবস্থাপনা কোমায় চলে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে হাদিউজ্জামান বলেন, ‘দুর্ঘটনা গবেষণাকেন্দ্রের ২০১৮ ও ২০১৯ সালের তথ্য বলছে, ১ কোটি ১৫ লাখ মানুষ ঈদের সময় বাড়িতে গেছে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে গত দুই বছরে চার ঈদে মানুষ গ্রামে কম গেছে। আমাদের তথ্য বলছে, প্রতি ঈদে কমপক্ষে ৬০ লাখ মানুষ গ্রামে গেছেন। আমাদের চলমান একটি গবেষণায় দেখা গেছে, ঈদের আগে চার দিনে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৩০ লাখ মানুষ ঢাকা ছাড়বেন। এ সময় প্রতিদিন বাসে ৮ লাখ, ট্রেনে ১ লাখ, লঞ্চে দেড় লাখ, ব্যক্তিগত গাড়িতে প্রায় ৪ লাখ, মোটরসাইকেলে প্রায় ৪ লাখ মানুষ ঢাকা ছাড়তে পারবেন। বাকি প্রায় ১২-১৩ লাখ মানুষ ঢাকা ছাড়বে ট্রাক, ট্রেনের ছাদে করে। তখন দুর্ঘটনার ঝুঁকি বেড়ে যাবে।’

হাদিউজ্জামান আরও বলেন, স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ২০ রমজানের পর বন্ধ হয়ে যাবে। পরিবারের সদস্যরা, যাদের কাজ নেই, তাদেরকে ২০ রমজান থেকে বাড়িতে পাঠিয়ে দিতে হবে। যাঁরা কর্মজীবী, ছুটি পেলে তাঁরা পরে যাবেন। তাহলে কিছুটা স্বস্তি মিলতে পারে।

যাত্রী কল্যাণ সমিতি মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী লিখিত বক্তব্যে বলেন, এবারের ঈদযাত্রায় রাজধানীবাসী যানজটের কারণে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়বে। তাই এই মুহূর্ত থেকে রাজধানীর সব ফুটপাত, রাস্তা হকার ও অবৈধ পার্কিংমুক্ত করার জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কাছে দাবি জানান তিনি।

মোজাম্মেল হক চৌধুরী আরও বলেন, রাজধানী থেকে দেশের বিভিন্ন জেলায় যাতায়াতের প্রবেশদ্বারগুলো বিশেষ করে যাত্রাবাড়ী, সায়েদাবাদ, বাবুবাজার ব্রিজ, পোস্তগোলা, টঙ্গী রেলস্টেশন, শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার উড়ালসেতু, মীরের বাজার, উলুখোলা, কাঞ্চন ব্রিজ, গাবতলী মাজার রোড, মীরের ধৌর, আশুলিয়া, ইপিজেড, চন্দ্রা, রায়েরবাজার শহীদ বুদ্ধিজীবী সেতু, জিঞ্জিরা, কেরানীগঞ্জ, হাতিরঝিল, মহাখালী, রামপুরা, শেখের জায়গা, আমুলিয়া, ডেমরা, সুলতানা কামাল ব্রিজ, চিটাগাং রোড, কাঁচপুর, মদনপুর, মেঘনা টোল, ভুলতা, গাউছিয়া, বরফা অন্যদিকে বিআরটি নির্মাণাধীন প্রকল্পের কারণে উত্তরা থেকে গাজীপুর পর্যন্ত যাতায়াতে মানুষকে অসহনীয় যানজটে পড়তে হবে। এসব যানজট নিয়ন্ত্রণে রাস্তার মোড় পরিষ্কার রাখা ও ছোট যানবাহন বিশেষ করে রিকশা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, ইজিবাইক প্রধান সড়কে চলাচল বন্ধে পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানান। তা না হলে আগামী ২৫ রমজান থেকে ঈদের দিন পর্যন্ত দুপুরের পর থেকে গভীর রাত অবধি রাজধানী অচল হয়ে যাবে।