ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাবেক সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট গতকাল শুক্রবার হাসপাতাল ছেড়েছেন। এরপর সরাসরি ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে গিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন তিনি। জুমার নামাজের পর সম্রাট বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী নিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এ সময় তার পরনে ছিল শোকের কালো পোশাক। পুষ্পস্তবক অর্পণকালে নেতাকর্মীরা মুহুর্মুহু স্লোগান দেন।
গত সোমবার সর্বশেষ এক মামলায় জামিন পান সম্রাট। এর আগে আরও তিন মামলায় জামিনে ছিলেন। ফলে ওই দিন মুক্তি পান বিএসএমএমইউ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সম্রাট। নেতাকর্মীরা তার হাসপাতাল ছাড়ার অপেক্ষায় ছিলেন। অসুস্থ থাকায় তাকে তিন দিন অপেক্ষা করতে হয় হাসপাতালের ছাড়পত্রের জন্য। অবশেষে বৃহস্পতিবার তাকে ছাড়পত্র দেয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) কর্তৃপক্ষ।
বিএসএমএমইউর কার্ডিওলজিস্ট বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও ইউনিট প্রধান ডা. রসুল আমিন বলেন, বুহস্পতিবার তাকে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দিয়েছি। তবে, তিনি শুক্রবার দুপুরে হাসপাতাল ছেড়েছেন।
তিনি আরো বলেন, এখনো তিনি পুরোপুরি সুস্থ হননি। বিএসএমএমইউ হাসপাতালেও সর্বশেষ সময় পর্যন্ত তার চিকিৎসা চলছিল। তিনি যেহেতু জামিনে মুক্তি পেয়েছেন, এখন নিজেই সিদ্ধান্ত নেবেন কোথায় চিকিৎসা চালিয়ে যাবেন। সর্বশেষ চিকিৎসকদের পক্ষ থেকে তাকে পরামর্শ দেয়া হয়েছে তিনি যেন চিকিৎসাটা চালিয়ে যান। কারণ যতটুকু বুঝতে পেরেছি, তার উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন। এখন সেই চিকিৎসাটা তিনি কোথায় নেবেন, সেটা তার ব্যক্তিগত বিষয়।
এদিকে জামিনের পরে গত তিন দিন সম্রাট নেতাকর্মীদের সঙ্গে দেখা করেন। কুশল বিনিমিয়ও করেন। অনেকটা খোশ মেজাজেই ছিলেন তিনি। জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের দায়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলায় ২২ আগস্ট ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬ এর বিচারক আল আসাদ আসিফুজ্জামান শুনানি শেষে ১০ হাজার টাকা মুচলেকায় সম্রাটের জামিন মঞ্জুর করেন। অসুস্থ বিবেচনায় আগামী ১৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তার জামিন মঞ্জুর করা হয়। ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান চলাকালে ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর সম্রাটকে কুমিল্লা থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। এরপর যুবলীগের পদ হারান তিনি। গ্রেপ্তার হওয়ার পর জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ওই বছরের ১২ নভেম্বর সম্রাটের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক।
চলতি বছরের ১০ এপ্রিল থেকে ১১ মের মধ্যে চার মামলায় জামিন পান সম্রাট। কারাগারে যাওয়ার ৩১ মাস পর মুক্তি মেলে তার। তবে এক সপ্তাহ পর ১৮ মে হাইকোর্ট জামিন বাতিল করে তাকে আবার বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের আদেশ দেন। সেখান থেকে তাকে আবার কারাগারে পাঠানো হয়। এর পর ২২ আগস্ট জামিনে কারামুক্ত হন তিনি।