ইউক্রেনের সীমানার ভেতরে রাশিয়ার অধিকৃত অঞ্চলে রুশ আধিপত্য মেনে নিলে দেশটির সাথে আলোচনায় বসতে রাজি আছেন বলে জানিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে অভিযান চালানোর পর ইউক্রেনের পূর্ব ও দক্ষিণাঞ্চলের যে এলাকাগুলো রাশিয়ার দখলে এসেছে, সেগুলোয় ক্রেমলিনের আধিপত্য মেনে নিলে ইউক্রেনের সাথে আলোচনায় বসবে রাশিয়া।
অর্থাৎ, এখন পর্যন্ত রুশদের দখলে থাকা দোনেৎস্ক, লুহানস্ক, খেরসন ও ঝাপরোঝিয়া অঞ্চলকে নিজ মানচিত্র থেকে বাদ দিলেই একমাত্র রাশিয়া দেশটির সাথে সমঝোতার আলোচনায় বসবে। কিয়েভের প্রতি সরাসরি এই প্রস্তাব ছুড়ে দিয়েছেন খোদ ভ্লাদিমির পুতিন।
এদিকে পুতিনের এই অবস্থান নিয়ে পশ্চিমা দেশগুলোর সামরিক জোট ন্যাটোর প্রধান জেনস স্টলটেনবার্গ সবাইকে সতর্ক করে বলেছেন, ইউক্রেনে পুতিনের উচ্চাকাঙ্ক্ষাকে খাটো করে দেখলে তা ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনতে পারে।
আল-জাজিরা জানায়, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের সাথে ফোনালাপের সময় ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনের সাথে আলোচনায় বসার এই পূর্বশর্তের কথা বলেন। তিনি বলেন, কিয়েভের সাথে আলোচনায় তিনি রাজি আছেন। তবে তার আগে কিয়েভকে নতুন ভৌগোলিক সীমানার বাস্তবতা মেনে নিতে হবে।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়া ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করে। পরে বছরের শেষ দিকে দেওয়া এক বক্তব্যে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন প্রথমবারের মতো এই অভিযানকে যুদ্ধ হিসেবে আখ্যা দেন। এই যুদ্ধে এরই মধ্যে ন্যাটো জোট জড়িয়ে পড়েছে। বিশেষত যুক্তরাষ্ট্রের সম্পৃক্ততা একে বড় শঙ্কার কারণ করে তুলেছে। বছরের শেষ দিকে দেওয়া বক্তব্য এ নিয়ে ক্ষোভও প্রকাশ করেন পুতিন।
মস্কোর পক্ষ থেকে বরাবরই এই যুদ্ধের মীমাংসা হিসেবে আলোচনার কথা বলা হয়েছে। তবে এ জন্য বেশ কিছু শর্ত তারা বেঁধে দিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ইউক্রেনকে জোটে টানার কাজটি ন্যাটো করতে পারবে না। একে মস্কো দেখছে নিরাপত্তা হুমকি হিসেবে। এ ছাড়া অধিকৃত এলাকাগুলোকে রাশিয়ার বলে মেনে নিতে হবে বলেও তারা বলে আসছে। যদিও ইউক্রেন চাইছে, রাশিয়া সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলো থেকে সেনা প্রত্যাহার করলেই কেবল তারা আলোচনায় বসবে।
এদিকে যুদ্ধ থামার কোনো লক্ষণ নেই। ইউক্রেনের পক্ষ থেকে ন্যাটোভুক্ত দেশগুলো থেকে সামরিক সহায়তা চাওয়া হচ্ছে। সর্বশেষ গেল ডিসেম্বরে যুক্তরাষ্ট্র সফর করে আসেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। এই সফরের পর রাশিয়ার পক্ষ থেকে হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়। তারা ছায়া-যুদ্ধকে যুদ্ধ হিসেবেই বিবেচনা করবে বলে জানিয়ে দেয়। সব মিলিয়ে শান্তির দিকে কোনো পক্ষই এগোয়নি এখনো।
Leave a Reply